পুরো খবর জানতে পড়ুন বিস্তারিত।
কয়েকদিন আগে বেনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগে একসঙ্গে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করার আদেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। স্বাভাবিকভাবেই একসঙ্গে এত শিক্ষকের চাকরি বাতিল হলে বিশৃঙ্খলা দেখা যাবে রাজ্যের শিক্ষা মহলে। তাই এই নিয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পর্ষদ। সেই নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আপডেট জানা গেল এ দিন। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ইন্টারভিউ পর্বের পর যারা চাকরি পেয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৩৪ হাজার ভুয়ো শিক্ষক। পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত পরিমার্জিত করে সেই সংখ্যা ৩২ হাজারে দাঁড়ায়।
কিন্তু একসঙ্গে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল ভারতের ইতিহাসে এর আগে কখনো হয়েছে বলে মনে হয় না। স্বাভাবিকভাবেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশে। শিক্ষা পর্ষদ সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা উচ্চ আদালতে যাবে। তবে মাথায় রাখতে হবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যে সকলের চাকরি গেছে এমনটা নয়।
বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেহেতু নিয়োগ প্রক্রিয়ার ইন্টারভিউ পর্ব ও অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে তাই আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে পর্ষদকে এই সকল শিক্ষকের পুনরায় ইন্টারভিউ নিতে হবে। এখানে তারা যদি উত্তীর্ণ হতে পারেন তাহলে তাদের চাকরি বহাল থাকবে।
রাজ্যে ৩০ শে জুন অবধি বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা, বিপাকে আমজনতা।
যতদিন না সেই ইন্টারভিউ হচ্ছে সেই শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন না, এমন কোন নির্দেশ নেই। এই শিক্ষকদের স্কুলে যেতে হবে এবং নিয়মিত ক্লাস নিতে হবে। তবে পূর্ণ সময়ের শিক্ষকের পরিবর্তে তারা প্যারা টিচারদের পে স্কেলে স্যালারি পাবেন এই সময়টায়। স্বাভাবিকভাবেই প্রাথমিক শিক্ষকরা এই রায় সহজে মেনে নিতে পারেননি। অনেকের দাবি মুষ্টিমেয় কিছু মানুষকে সুবিধা পাইয়ে দিতে পর্ষদ এমনভাবে অনিয়ম করে নিয়োগ করেছে।
কিন্তু সামান্য কয়েকজন মানুষের দায় সকলে নেবেন না। ইতিমধ্যে এই বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ঘুরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। সেখানে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আংশিক বহাল রাখা হলেও কিছুটা পরিবর্তিত করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যেমন জানিয়েছিলেন সেরকম ভাবে ইন্টারভিউ করতে হবে। একই সঙ্গে সম্পূর্ণ ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার ভিডিও হবে। তবে ৩২ হাজার শিক্ষকের বেতনের ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন হবে না। তারা আগে যা বেতন পাবেন এখনো সেই পরিমাণ বেতনই পাবেন। তবে পর্ষদের সেই ইন্টারভিউতে অকৃতকার্য হলে কিন্তু চাকরি যাবে শিক্ষকদের।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই ইন্টারভিউ নিতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে পর্ষদ। জানা যাচ্ছে ইন্টারভিউ প্যানেলে যারা থাকবেন তারা সরাসরি নাম্বার আপলোড করে দেবেন সার্ভারে। তিনজন পরীক্ষক থাকবেন ইন্টারভিউর সময়। তাদের গড় নম্বরই প্রাপ্ত নম্বর হবে উক্ত শিক্ষকের। বলাই বাহুল্য, এই সিদ্ধান্তে আরো বেশি স্বচ্ছতা আসবে নিয়োগ প্রক্রিয়ায়।