apply-for-the-nabanna-scholarship-and-will-get-a-grant-of-rs-10000-every-year

মুখমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নানাধরনের স্কলারশিপ প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে। আর এই সমস্ত প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য হলো মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে কার্যকরী নবান্ন স্কলারশিপ বা উত্তরকন্যা স্কলারশিপ। পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী দরিদ্র এবং আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করাই এই স্কলারশিপের অন্যতম উদ্দেশ্য।

যদিও এই স্কলারশিপটি বাংলার দুই ক্ষেত্রে দুই নামে পরিচিত। উত্তরবঙ্গের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এই স্কলারশিপটি উত্তরকন্যা স্কলারশিপ নামেই বিশেষ পরিচিত এবং দক্ষিণবঙ্গের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে এই স্কলারশিপটি নবান্ন স্কলারশিপ নামে পরিচিত। যার জেরে এই স্কলারশিপটির নাম সহ, আবশ্যিক যোগ্যতা, আবেদনের প্রক্রিয়া এবং আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নানাবিধ প্রশ্ন উঠেছে। আর তাই আজ আমরা এই পোস্টে ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছি।

এই স্কলারশিপের আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যিক যোগ্যতা কি কি:-

১. রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে ছাত্র অথবা ছাত্রীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

২. যেসমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বর্তমান একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন তারাই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।

৩. অন্যদিকে, উচ্চমাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।

৪. স্নাতক স্তরে যেসকল ছাত্রছাত্রী ৫৩% – ৫৫ % নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানোর যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

৫. নবান্ন স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে একজন ছাত্র অথবা ছাত্রী পরিবারের বাৎসরিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকা বা তার চেয়ে কম হতে হবে।

৬. যদি কোনো ছাত্র বা ছাত্রী স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ সহ অন্য যেকোনো সরকারি স্কলারশিপের আওতায় অনুদান পেয়ে থাকেন তবে ওই ছাত্র বা ছাত্রী নবান্ন স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের সুযোগ পাবেন না।

৭. কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বীকৃত যেকোনো স্কুল, কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা নবান্ন স্কলারশিপের আওতায় অনুদান পাবেন।

আরও পড়ুন:- বহু সংখ্যক শূন্যপদে মাল্টি টাস্কিং স্টাফ নিয়োগ। শুধুমাত্র মাধ্যমিক পাশ যোগ্যতায় আবেদন করুন।

অনুদানের পরিমাণ:-

এই স্কলারশিপের আওতায় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যেক বছর ১০,০০০ টাকার অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।

আবেদনের প্রক্রিয়া:-

নবান্ন স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে একজন ছাত্র বা ছাত্রীকে প্রথমেই http://wbcmo.gov.in/ ওয়েবসাইটে গিয়ে নবান্ন স্কলারশিপের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ফর্ম ডাউনলোড করে নিতে হবে। এরপর ফর্মটি প্রিন্ট করে নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীর নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ঠিকানা, কন্ট্যাক্ট ডিটেইলস, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য তথ্যগুলি সঠিকভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথি যুক্ত করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পোস্ট মারফত পাঠিয়ে দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, রাজ্য সরকারের তরফে নির্ধারিত অফিসে গিয়ে আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রী অথবা আবেদনকারীর পিতা, মাতা অথবা অভিভাবক আবেদনপত্রটি জমা দিলে এটি অধিক কার্যকরী হবে।

apply-for-the-nabanna-scholarship

নবান্ন স্কলারশিপের আবেদনপত্র জমা করার ঠিকানা (দক্ষিণবঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের জন্য):-

Department of CMRF Scholarships,
Chief Minister’s Office :’Nabanna’ 14th Floor, 325 Sarat chatterjee Road, Howrah-711 102

উত্তরকন্যা স্কলারশিপের আবেদনপত্র জমা করার ঠিকানা:-

Department of CMFF Scholarships, Office of the Chief Minister’s mini Secretariat ‘Uttarkanya ‘New Satellite Township Fulbari, Near NJP Station, Jalpaiguri

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি সমূহ:-

১. পূর্ববর্তী পরীক্ষার মার্কশিট।
২. ছাত্র বা ছাত্রী বর্তমানে যে কোর্সে পাঠরত তাতে ভর্তির প্রমাণপত্র বা ভর্তির রশিদ।
৩. আবেদনকারীর পরিচয় পত্র (আধার কার্ড/ ভোটার কার্ড/ রেশন কার্ড)
৪. আবেদনকারীর সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
৫. সেলফ ডিক্লিয়ারেশন ফর্ম।
৬. আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীর পরিবারের বাৎসরিক আয়ের সার্টিফিকেট।
৭. MlA /MP রেকমেন্ডেশন লেটার।
৮. আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য।
৯. রাঙ্ক কার্ড।
১০. আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর।
১১. বৈধ ইমেইল অ্যাড্রেস।

আরও পড়ুন:- মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনি জানেন কি? না জানলে জেনে নিন।

আবেদনের সময়সীমা:-

রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, নবান্ন স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। বছরের যেকোনো সময়ই সঠিক নথিপত্র সহকারে এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানানো সম্ভব। তবে নতুন কোর্সে ভর্তি হওয়ার পরই এই স্কলারশিপে আবেদন জানানোর সবথেকে ভালো সময়।