প্রাইভেট স্কলারশিপ

আবেদন করুন সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপে এবং প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৩২০০ টাকা পেয়ে যান।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী মেধাবী অথচ দরিদ্র ছাত্রছাত্রীরা যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে এবং পরবর্তীতে নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে পারে তার জন্য সীতারাম জিন্দাল ফাউন্ডেশনের তরফে সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ স্কিম কার্যকরী করা হয়েছে। মাধ্যমিকের পর একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হলেই ছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের অধীনে আবেদন করতে পারবেন। তবে শুধুমাত্র উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্র-ছাত্রীরা নয় স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ডিপ্লোমা, মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্তরের ছাত্রছাত্রীরাও এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।

চলুন তবে প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক কারা এই স্কলারশিপে আবেদনের যোগ্য:-
১. যেসমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা বর্তমানে একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত তারা এই স্কলারশিপের অধীনে অনুদানের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আবেদনের জন্য ছাত্রদের পূর্ববর্তী পরীক্ষায় ৬৫ শতাংশ এবং ছাত্রীদের ৬০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

২. অন্যদিকে, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের ক্ষেত্রে যেসকল ছাত্ররা ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং যেসকল ছাত্রীরা ৫৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা এই স্কলারশিপের অধীনে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদন করুন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে এবং বছরে পেয়ে যান ৫ লক্ষ টাকা। কিভাবে আবেদন করবেন জেনে নিন।

৩. আইটিআই-এর পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে যেসকল পড়ুয়ারা সরকারি ITI কলেজে পাঠরত তারা পাশ নম্বর পেলেই এই স্কলারশিপের অধীনে আবেদন করতে পারবেন। অন্যদিকে, বেসরকারি ITI কলেজে পড়াশোনা করছেন এমন ছাত্ররা যদি পূর্ববর্তী পরীক্ষায় ৪৫ শতাংশ নম্বর পায় এবং ছাত্রীরা ৩৫ শতাংশ নম্বর পায় তবে তারা এই স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবেন।

৪. ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাঠরত ছাত্রীরা ৬০ শতাংশ নম্বর পেলে এবং ছাত্ররা ৬৫ শতাংশ নম্বর পেলেই তারা এই স্কলারশিপের অধীনে আবেদন জানাতে পারবেন।

৫. এর পাশাপাশি ডিপ্লোমা কোর্সে পাঠরত ছাত্ররা ৫৫ শতাংশ নম্বর পেলে এবং ছাত্রীরা ৫০ শতাংশ নম্বর পেলেই এই স্কলারশিপের অধীনে আবেদন জানাতে পারবেন।

৬. এছাড়াও এই স্কলারশিপের অধীনে আবেদনের ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের বার্ষিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকা কিংবা তার চেয়ে কম হতে হবে। অন্যদিকে, যেসব পড়ুয়ার পিতা অথবা মাতা অথবা বাড়ির কোনো সদস্য কোনোক্ষেত্রে চাকুরীরত তাদের পরিবারের বার্ষিক আয় ৪ লক্ষ টাকার চেয়ে কম হতে হবে।

৭. স্কলারশিপে আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর বয়স ৩০ বছরের চেয়ে কম হতে হবে।

৮. ১ বছরের চেয়ে কম সময়ের কোন কোর্সে পাঠরত শিক্ষার্থীরা এই স্কলারশিপের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করানোর জন্য আবেদন জানাতে পারবেন না।

এই স্কলারশিপের অধীনে কতো টাকা অনুদান পাওয়া যায়?
১. যেসকল ছাত্ররা একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত তারা এই স্কলারশিপের অধীনে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা অর্থাৎ এক বছরে ৬,০০০ টাকা পাবেন। অন্যদিকে, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের অধীনে প্রতি মাসে ৭০০ টাকা পাবেন অর্থাৎ এক বছরে ৮৪০০ টাকা পাবেন।

২. একইভাবে সরকারি ITI-তে পাঠরত শিক্ষার্থীরা প্রতি মাসে ৫০০ টাকা এবং প্রাইভেট ITI-তে পাঠরত শিক্ষার্থীরা ৭০০ টাকা করে পাবেন।

৩. স্নাতকস্তরে পড়াশোনা চলাকালীন ছাত্ররা এই স্কলারশিপের অধীনে প্রতি মাসে ১১০০ টাকা এবং ছাত্রীরা ১৪০০ টাকা করে পাবেন। অন্যদিকে, স্নাতকস্তরে পাঠরত বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতি মাসে ১৪০০ টাকা এবং প্রাক্তন সেনাদের অবিবাহিত বিধবা স্ত্রী এই স্কলারশিপের অধীনে প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা করে অনুদান পাবেন।

৪. স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরত ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের অধীনে প্রতি মাসে ১৮০০ টাকা এবং ছাত্ররা প্রতি মাসে ১৫০০ করে পাবেন। স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন এরূপ বিশেষ ভাবে সক্ষম ছাত্র-ছাত্রীরা এবং প্রাক্তন সেনাদের অবিবাহিত বিধবা স্ত্রী অধীনে থাকা এই স্কলারশিপের অধীনে ১৮০০ টাকা করে প্রত্যেক মাসে পাবেন।

৫. ডিপ্লোমা কোর্সে পাঠরত ছাত্ররা এই স্কলারশিপের প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে পাবেন। অন্যদিকে ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের অধীনে ১২০০ টাকা করে পাবেন।

৬. ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিসিনে পাঠরত ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের অধীনে প্রতি মাসে ২৩০০ টাকা, অন্যদিকে, এই কোর্সে পাঠরত ছাত্ররা প্রতি মাসে ২০০০ টাকা করে পাবেন। অন্যদিকে, যেসমস্ত ছাত্ররা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের উপর গ্র্যাজুয়েশন করছেন তারা এই স্কলারশিপের অধীনে প্রতি মাসে ২৫০০ টাকা করে পাবেন, এক্ষেত্রে ছাত্রীরা প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে পাবেন। এর পাশাপাশি যেসমস্ত ছাত্রীরা মেডিসিনের কোর্সগুলোর ওপর গ্র্যাজুয়েশন করছেন তারা এই স্কলারশিপের অধীনে প্রত্যেক মাসে ৩২০০ টাকা করে পাবেন, এক্ষেত্রে ছাত্ররা প্রতি মাসে ২৮০০ টাকা করে পাবেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ITI, গ্র্যাজুয়েশন, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের যেসমস্ত ছাত্রছাত্রীরা হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছেন তারা অতিরিক্ত ১২০০ টাকা করে পাবেন। অন্যদিকে, মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্রছাত্রীরা ১৮০০ টাকা করে পাবেন।

স্কলারশিপের অধীনে আবেদনের প্রক্রিয়া:-
স্কলারশিপের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করানোর জন্য প্রথমে একজন শিক্ষার্থীকে buddy4study -এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://www.buddy4study.com/scholarship/sitaram-jindal-foundation-scholarship-scheme -এ যেতে হবে। এরপর আপনার সামনে যে পেজটি আসবে তার একেবারে শেষে থাকা Apply Now অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ইমেল আইডি, ফোন নম্বর, গুগল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করলে আবেদনকারীর সামনে প্রয়োজনীয় ফর্মটি চলে আসবে। এরপর ফর্মটি প্রিন্ট করে নিয়ে সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে এবং প্রয়োজনে নথিগুলি যুক্ত করে একটি মুখবন্ধ খামে পুরে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠাতে হবে।

আবেদন পত্র পাঠানোর ঠিকানা:-
The Trustee, Sitaram Jindal Foundation, Jindal Nagar, Tumkur Road, Bengaluru – 560073

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি:-
১. আবেদনকারীর উচ্চমাধ্যমিকের মার্কশিট।
২. আবেদনকারীর পূর্ববর্তী পরীক্ষার মার্কশিট।
৩. পারিবারিক আয়ের শংসাপত্র।
৪. মেরিট সার্টিফিকেট (কেবলমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল, এমবিএ এবং ডিপ্লোমা কোর্সে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)।
৫. ফি পেমেন্টের সার্টিফিকেট।
৬. হোস্টেল ওয়ার্ডনের সার্টিফিকেট (যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছেন কেবলমাত্র তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)।
৭. প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট।

আবেদনের সময়সীমা:-
এই স্কলারশিপের অধীনে আবেদনের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। নতুন কোর্সে ভর্তি হওয়ার পরই ছাত্র-ছাত্রীরা এই কোর্সের অধীনে অনুদানের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। এছাড়াও সারাবছর এই স্কলারশিপের অধীনে অনুদানের জন্য আবেদন জানানো সম্ভব।

Related Articles

Back to top button