পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সাধারণ যুবক-যুবতীদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে। আর এই সমস্ত প্রকল্পগুলির তালিকায় অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি প্রকল্প হলো গতিধারা প্রকল্প (Gatidhara Prakalpa)। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে যে, রাজ্যের কর্মহীন বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের কথা মাথায় রেখে এই প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। রাজ্যের বহু সংখ্যক যুবক-যুবতী এই নতুন প্রকল্প সম্পর্কে জানলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রকল্পটির অধীনে নাগরিকরা কি সুবিধা পাবেন, এই প্রকল্পের অধীনে কিভাবে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করা সম্ভব তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানেন না।
চলুন তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে কার্যকরী গতিধারা প্রকল্প (Gatidhara Prakalpa) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক:-
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকরী এই প্রকল্পের অধীনে কর্মহীন যুবক-যুবতীদের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত গাড়ি কেনার জন্য আংশিক অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী যেকোনো কর্মহীন যুবক-যুবতী যদি গাড়ি কিনে নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে ওই গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফে আংশিকভাবে সাহায্য করা হবে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার অন্তর্ভুক্ত গ্রামগুলির বেকার যুবক-যুবতীদের স্বনির্ভর করার জন্যই এই প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে বলেই জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
তবে এখানেই শেষ নয়, রাজ্য সরকারের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, গতিধারা প্রকল্পের আওতায় যেসকল যুবক-যুবতী গাড়ি কিনবেন তারা পরিবহণ দপ্তরের তরফে পারমিট পাওয়ার ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার পাবেন। এমনকী এক্ষেত্রে বিশেষভাবে সক্ষম যুবক-যুবতীদেরও এই প্রকল্পের অধীনে সুযোগ দেওয়া হবে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, গতিধারা প্রকল্পের আওতায় যেকোনো বাণিজ্যিক গাড়ি কিনলেই সেই গাড়ির দামের ৩০ শতাংশ ভর্তুকি রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকার ভর্তুকি দেওয়া হবে।
তবে রাজ্য সরকারের অন্যান্য প্রকল্পের মতো এই প্রকল্পের অধীনেও আবেদনের ক্ষেত্রে রাজ্যের কর্মহীন যুবক-যুবতীদের বেশ কতোগুলি শর্ত পূরণ করতে হবে। আর সেই সমস্ত শর্তগুলি হলো:-
১. এই প্রকল্পের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে উক্ত যুবক কিংবা যুবতীর বয়স ২০ বছর থেকে শুরু করে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। এক্ষেত্রে যুবক-যুবতীদের বয়স উক্ত বছরের ১লা এপ্রিল তারিখ অনুসারে হিসেব করা হবে। তবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত আবেদনকারীরা বয়সের ক্ষেত্রে ৫ বছরের ছাড় পাবে এবং বয়সের ক্ষেত্রে ৩ বছরের ছাড় পাবে।
২. যেসকল কর্মহীন যুবক-যুবতীদের নাম এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কের অধীনে নথিভুক্ত রয়েছে তারাই কেবলমাত্র এই প্রকল্পের অধীনে আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
৩. প্রকল্পের অধীনে আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারী যুবক-যুবতীদের পরিবারের মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকা কিংবা তার চেয়ে কম হতে হবে।
৪. যেসমস্ত কর্মহীন যুবক-যুবতীরা যুবশ্রী প্রকল্পের অধীনে অনুদান পেয়ে থাকেন তারাও এই প্রকল্পের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। যদিও এই প্রকল্পের অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার পর তারা আর যুবশ্রী প্রকল্পের অধীনে অনুদান পাবেন না।
রাজ্য সরকারের তরফে আরো জানানো হয়েছে যে, গতিধারা প্রকল্পের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে যেকোনো কর্মহীন যুবক বা যুবতীকে আঞ্চলিক স্তরে পারমিশনের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকের অফিসে অর্থাৎ RTO অফিসে এবং রাজ্যস্তরে পারমিট পাওয়ার ক্ষেত্রে স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটির অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। এই অফিস থেকেই তারা আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য জানতে পারবেন এবং আবেদনের প্রক্রিয়াটিও সম্পন্ন করতে পারবেন।