পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত সাধারণ জনগণের যেকোন সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের সুবিধা পাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকরী বিভিন্ন নথি প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে যে নথিটি অত্যাবশ্যক তা হলো কাস্ট সার্টিফিকেট (Caste Certificate) বা জাতিগত শংসাপত্র। আর তাতেই সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু শ্রেণিভুক্ত জনগণের মধ্যে ক্রমাগত হারে কাস্ট সার্টিফিকেট বা জাতিগত শংসাপত্রের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। যদিও অনেকক্ষেত্রেই নাগরিকদের ফর্ম পূরণের ভুল হওয়ার কারণে বা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কাস্ট সার্টিফিকেট (Caste Certificate) বা জাতিগত শংসাপত্রে নাম, পিতার নাম কিংবা ঠিকানা সহ অন্যান্য তথ্যে বিভিন্ন ধরনের ভুল থেকে যায়।
আর মূল সমস্যাই এখানে। অধিকাংশ সাধারণ জনগণই এখনো পর্যন্ত সঠিকভাবে জানেন না ঠিক কিভাবে কাস্ট সার্টিফিকেটের বিভিন্ন ধরনের ভুল সংশোধন করতে পারবেন। আর তাতেই কিভাবে কাস্ট সার্টিফিকেট সংশোধন করা সম্ভব, সেক্ষেত্রে কি কি নথি প্রয়োজন হয়ে থাকে তা জানার জন্য পশ্চিমবঙ্গবাসী জনগণের মধ্যে বারংবার নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। আর আজ আমরা সাধারণ জনগণের এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়েই হাজির হয়েছি।
আরও পড়ুনঃ- জমির দলিলের সাথে শুরু হলো আধার লিঙ্ক। সকলকে করতে হবে।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনারা কাস্ট সার্টিফিকেট সংশোধনের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন:-
নাগরিকদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, রাজ্য সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কার্যকারী নানাবিধ প্রকল্পের জন্য আবেদন কিংবা নানারকম নথির সংশোধনের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে আপনারা যেমন বাড়িতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন জানাতে পারেন কাস্ট সার্টিফিকেটের ক্ষেত্রে তেমনটা হওয়া সম্ভব নয়। কাস্ট সার্টিফিকেট সংশোধন করার জন্য আপনার এলাকায় SDO অফিসের মাধ্যমে আবেদন জানাতে হবে। আপনার কাস্ট সার্টিফিকেটে কি কারণে, কোন ক্ষেত্রে ভুল আছে তা জানিয়ে এসডিওকে উদ্দেশ্য করে একটি আবেদনপত্র লিখতে হবে এবং সেই ভুলটি সংশোধন করে দেওয়ার জন্য আবেদন জানাতে হবে।
এই আবেদনপত্রটি আপনি হাতে লিখতে পারেন। এছাড়াও আপনার সুবিধা অনুসারে আবেদনপত্রটি কম্পিউটারের মাধ্যমেও টাইপ করতে পারেন। এই আবেদনের পত্রের সাথে নির্দিষ্ট নথি যুক্ত করে এসডিও অফিসের যে ডিপার্টমেন্টে কাস্ট সার্টিফিকেট সংশোধন সংক্রান্ত কাজ করা হয় সেই ডিপার্টমেন্টে জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনাকে কাস্ট সার্টিফিকেট সংশোধনের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ- শুরু হলো আধার ভেরিফিকেশন, মাত্র ২ মিনিটে করে নিন এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ
আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি:-
আবেদনকারীর অরিজিনাল কাস্ট সার্টিফিকেট।
আবেদানকারীর প্যান কার্ড।
ভোটার কার্ড।
আধার কার্ড।
বার্থ সার্টিফিকেট বা জন্মের শংসাপত্র।
বাসিন্দা সার্টিফিকেট।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিভিন্ন সূত্রের তরফে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, কাস্ট সার্টিফিকেট সংশোধিত হয়ে নতুন কার্ড সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য অন্ততপক্ষে ২০ দিন সময় লেগে যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এর চেয়ে বেশি কিংবা কম সময় লেগে থাকে। অর্থাৎ সঠিকভাবে কতদিন সময় প্রয়োজন তা বলা সম্ভব নয়। তবে নতুন সার্টিফিকেট পাওয়ার পূর্বে আপনাকে পুরোনো ত্রুটিযুক্ত কাস্ট সার্টিফিকেটটি জমা করতে হবে। এর পাশাপাশি নাগরিকদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, উপরে যেসমস্ত নথিগুলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেই সমস্ত নথিগুলির জেরক্স কপি জমা দেবেন।
এক্ষেত্রে কোনোরূপ অরিজিনাল কপি প্রয়োজন হয় না। নতুন কাস্ট সার্টিফিকেটের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ভুল কাস্ট সার্টিফিকেটের অরিজিনাল কপি প্রয়োজন হয়ে থাকে। ত্রুটিযুক্ত কাস্ট সার্টিফিকেট বাদে অন্য কোনো নথির অরিজিনাল কপি জমা দেবেন না। সুতরাং, আপনারও যদি কাস্ট সার্টিফিকেটে ভুল থেকে থাকে তবে কাস্ট সার্টিফিকেট সংশোধনের আবেদনপত্র এবং উপরোক্ত নথি সহকারে আপনার এলাকার SDO অফিসে গিয়ে অবশ্যই আবেদন জানান।