নার্সারির ব্যবসা (Nursery Business)
Advertisement

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে জুড়ে শীতের আবহ। আর এই শীতের মরসুমে মানুষ নানাধরনের ফুলের গাছ লাগাতে পছন্দ করে, এমনকী আজকাল গরম হোক কিংবা শীত বছরের যেকোনো সময়েই নাগরিকরা নানাধরনের গাছ দিয়ে নিজেদের বাড়িকে সাজিয়ে তুলতে পছন্দ করেন। আর তাই আপনি এখন মানুষের এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব নার্সারির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

Advertisement

নার্সারির ব্যবসায় একাধারে যেমন আপনি বাড়িতে বসেই নিজের সময় মতো সমস্ত কাজ করতে পারবেন এবং নিজের বাড়ি থেকেই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, অন্যদিকে সঠিকভাবে প্রচার করতে পারলে এই নার্সারির ব্যবসা থেকেই কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে নিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান এবং যথেষ্ট সাবধানতার প্রয়োজন রয়েছে নয়তো ছোট্ট একটি ভুলে আপনার যথেষ্ট মূল্যবান গাছগুলি মুহূর্তেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

Advertisement

নার্সারি শুরু করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র:- প্রথমেই বলে রাখা প্রয়োজন, নার্সারি শুরু করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ জমি প্রয়োজন হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি এই জমিকে চাষের উপযোগী করে তোলার জন্য সার, কীটনাশক, উপযুক্ত সেচ ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়াও গাছের বীজ, চারাগাছ, ছোট বড় নানা মাপের বিভিন্ন ডিজাইনের টব, স্প্রেয়ার, ছুরি, কাঁচি, সাঁড়াশি, হাঁড়ি সহ গাছের পরিচর্যার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অন্যান্য যন্ত্রাদি প্রয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়াও গাছের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে নার্সারি শেড, মিস্ট হাউস, প্রপাগেশন হাউসের প্রয়োজন হয়ে থাকে। উপরোক্ত জিনিসগুলি থাকলেই আপনি আপনার বাড়িতে অথবা আপনার সুবিধামতো যেকোনো জায়গায় যথেষ্ট জমি নিয়ে নার্সারির ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তবে আপনার বাড়িতে যদি যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা না থাকে তাহলেও আপনি নার্সারির ব্যবসা চালাতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ছাদে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গাছের চাষ শুরু করতে হবে এবং সেটিকে ধীরে ধীরে আপনার নার্সারি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

মাত্র কয়েকদিনেই হাতে পাওয়া যাবে জব কার্ড, কিভাবে আবেদন করবেন জেনে নিন এখনই

নার্সারি তৈরির ক্ষেত্রে কোন কোন ধরনের গাছ চাষ করলে বেশি লাভ পাওয়া যাবে?
এক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন যে, আপনাকে মানুষের চাহিদা অনুসারে গাছের চাষ করতে হবে। যেমন, শীতকালে চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, সূর্যমুখী, গাঁদার মতো শীতকালীন ফুলের চাহিদা অত্যন্ত বেশি থাকে। সুতরাং, শীতকালে আপনি এই সমস্ত গাছগুলি চাষ করে যথেষ্ট টাকা উপার্জন করতে পারবেন। একইভাবে এরূপ মৌসুমী ফলের গাছ, পাতাবাহার গাছ, বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ সহ নানাবিধ দুর্লভ গাছ এবং মৌসুমী শাকসবজিও নিজের সংগ্রহে রাখতে পারেন। এছাড়াও আপনার এলাকার বাজারে এবং মানুষের মধ্যে যে ধরনের গাছ লাগানোর প্রবণতা বেশি বা যে ধরনের গাছগুলি যথেষ্ট পরিমাণে বিক্রি হয়ে থাকে সেই ধরনের গাছগুলি আপনার সংগ্রহে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখা প্রয়োজন যে, আপনার দোকান থেকে গ্রাহক যেন কোনোমতেই ফিরে না যায়। যেকোনো মূল্যে গ্রাহক সন্তুষ্ট হলেই আপনার ব্যবসা লাভের মুখ দেখবে।

মার্কেটিং:- আপনাকে আপনার নার্সারিটি এমন একটি জায়গায় গড়ে তুলতে হবে যেখানে বহু লোকের সমাগম হয়ে থাকে। আপনার বাড়ির নিকটবর্তী বড় বাজার অথবা বাস স্ট্যান্ড কিংবা স্টেশনের পাশে যেকোনো জায়গায় আপনি আপনার নার্সারিটি শুরু করতে পারেন। এছাড়াও আপনার বাড়ির আশেপাশেই যদি যথেষ্ট লোকসমাগম হয়ে থাকে তবে আপনি আপনার বাড়িতেই এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। অফলাইনে বিক্রির পাশাপাশি আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট মাধ্যমে অনলাইনের মারফত গাছ বিক্রি করতে পারবেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রয়োজন অনুসারে গাছ সরবরাহ করেও আপনি যথেষ্ট টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এছাড়াও গাছের বীজ এবং শুধুমাত্র ফুল বিক্রি করেও আপনি যথেষ্ট টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন।

বিনিয়োগ এবং লাভ:- আপনি যদি প্রথমে ছোটভাবে নার্সারির ব্যবসা শুরু করতে চান তবে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রয়োজন হবে। তবে বড় করে যথেষ্ট ভালোভাবে ব্যবসা শুরু করতে গেলে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে। আর সঠিকভাবে মার্কেটিং এবং প্রচার করতে পারলে আপনার বিনিয়োগের টাকা কয়েক মাসেই উঠে আসবে। আর আপনার নার্সারি পরিচিতি পেতে শুরু করলেই মাসে আপনি অন্ততপক্ষে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে নিতে পারবেন।