সমগ্র ভারতজুড়ে অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি ক্রমাগত হারে চিকিৎসা ক্ষেত্রের খরচও বাড়ছে। আর এই মূল্যবৃদ্ধির তালিকা থেকে কোনোমতে বাদ পড়েনি পশ্চিমবঙ্গের নাম। ফলত পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর নাগরিকদের বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে যাতে কোনোরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্য সরকারের তরফে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প এবং স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ড কার্যকর করা হয়েছিল।
কিন্তু সমস্যা অন্যক্ষেত্রে। রাজ্য সরকারের অন্যান্য প্রকল্পের মতোই স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়েও বারংবার অনিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড -এর আওতাভুক্ত নাগরিকদের তরফে বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছে। এমনকী অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা করাতে গেলে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হয়েছে পশ্চিমবঙ্গবাসী নাগরিকদের। এই অনিয়ম বন্ধ করতে রাজ্য সরকারের তরফে বারংবার স্বাস্থ্য সাথী সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আর এবারে নতুন অর্থবর্ষ শুরু হবার ঠিক আগেই রাজ্য সরকারের তরফে আবারো স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে এক বিরাট ঘোষণা সামনে আনা হলো।
স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধানের জন্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট বা পিএমইউ গঠন করা হবে, মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। আগামী দিনে স্বাস্থ্য সাথী সংক্রান্ত যেকোনো রকম অনিয়ম নজরে পড়লে বা স্বাস্থ্যসা থী কার্ড নিয়ে রাজবাসীকে যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হলে তারা অনায়াসেই নিজেদের অভিযোগ এই প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিটকে জানাতে পারবেন। আর স্বাস্থ্য সাথী কার্ড -এর সুবিধাভোগীদের এই অভিযোগের ভিত্তিতে পিএমইউ -এর কর্মকর্তাদের তরফে সম্পূর্ণ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং যতো দ্রুত সম্ভব এই সমস্ত সমস্যার সমাধান করা হবে।
একলাফে রান্নার গ্যাসের দাম কমলো ২০০ টাকা। কিভাবে বুক করতে হবে জেনে নিন।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প সংক্রান্ত এই পিএমইউ গঠন হলে রাজ্যব্যাপী যেসমস্ত বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ফেরত দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে সেই সমস্ত অভিযোগ যতো দ্রুত সম্ভব খতিয়ে দেখা হবে। এমনকী যেসকল হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড গ্রহণ করা হচ্ছে না সেই সমস্ত হাসপাতালে কেনো স্বাস্থ্য সাথী কার্ড গ্রহণ করা হচ্ছে না তা জানতে চাওয়া হবে পিএমইউ -এর কর্মকর্তাদের তরফে। এছাড়াও স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকার পরও রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের হাসপাতাল থেকে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও যথাসম্ভব তদন্ত করা হবে পিএমইউ -এর তরফে।
রমজান উপলক্ষ্যে এই মাসে রেশন দোকান থেকে মিলবে অতিরিক্ত সামগ্রী। আপনি কি কি পাবেন জেনে নিন।
এর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের তরফে আরো জানানো হয়েছে যে, আগামী দিনে অনলাইনে এবং অফলাইন দুটি মাধ্যমেই রাজ্যের নাগরিকরা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সংক্রান্ত অভিযোগ পিএমইউ -এর কর্মকর্তাদের জানাতে পারবেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড সংক্রান্ত যেসমস্ত অনিয়ম চলছে তা যাতে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে বন্ধ করা যায় তার জন্যই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এইরূপ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে ওয়াকিবহালের কর্তা ব্যক্তিদের তরফে। তবে পিএমইউ -এর গঠন সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী দিনে রাজ্যের সাধারণ নাগরিকরা যথেষ্ট সুবিধা পাবেন বলেই দাবি করা হচ্ছে নবান্নের পক্ষ থেকে।