কি এই নিয়ম জানতে হলে পড়ুন বিস্তারিত।
বিশ্বের অন্যতম বড় রেল সংস্থা ভারতীয় রেল কিংবা আইআরসিটিসি। প্রতিদিন দেশের কয়েক কোটি মানুষ নিজেদের যাতায়াতের প্রয়োজনে ব্যবহার করেন ট্রেন। কিন্তু ট্রেন যাত্রীদের একাংশের কার্যকলাপ নিয়ে রীতিমত চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আইআরসিটিসির কপালে। জানা যাচ্ছি এসি কোচে যাতায়াতকারী অনেক যাত্রী ট্রেন থেকে নামার সময় রেলের বেশ কিছু জিনিস সঙ্গে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। এসি কোচে সাধারণত বালিশ এবং চাদর দেওয়া হয়।
অনেক মানুষই আছেন যারা ট্রেন থেকে নামার সময় ব্যাগের মধ্যে সেগুলি ভরে নিয়ে চলে যান। ফলে প্রতিবছর বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ছে ভারতীয় রেল। তবে এই চুরি রুখতে ইতিমধ্যেই সচেষ্ট হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের উদ্দেশ্যে কড়া নির্দেশিকা প্রকাশিত করেছে ভারতীয় রেল। যারা এরকম করছেন তাদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানানো হয়েছে বিলম্বে এই কাজ বন্ধ না করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
দেশে আগামী সপ্তাহ থেকে ব্যাপকহারে কমতে চলেছে পেট্রোল ডিজেলের দাম, জেনে নিন নতুন রেট।
জানা যাচ্ছে, যাত্রীদের একাংশের এই স্বভাবের জন্য প্রতিবছর বিপুল টাকা লোকসান হচ্ছে ভারতীয় রেলের। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, বিছানার চাদর, কম্বলের পাশাপাশি অনেকে চামচ, কেটলি কিংবা কল খুলে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। ভারতীয় রেলের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, ছত্তিশগড়ের বিলাসপুর জোনে এই চুরি রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিলাসপুর ও দুর্গ থেকে চলা দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনে কম্বল, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, মুখের তোয়ালে ক্রমাগত চুরি হয়েই যাচ্ছে। সবকিছু জানা সত্ত্বেও সেই চুরি রুখতে নাজেহাল হতে হচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষকে।
ভারতীয় রেলের জারি করা রিপোর্টে জানানো হয়েছে বিলাসপুর গ্রন্থ থেকে গত চার মাসের চুরি গেছে প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকার জিনিস! রিপোর্ট অনুযায়ী সঠিক পরিমাণ হল ৫৫ লক্ষ ৯৭ হাজার ৪০৬ টাকা। এই চুরির তালিকায় যা যা রয়েছে তা দেখলে বিস্মিত হতে হয়। জানা যাচ্ছে এই জোন থেকে গত চার মাসে প্রায় ১৩ হাজার তোয়ালে চুরি হয়েছে যার আনুমানিক মূল্য সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। ছাড়াও চুরি হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার বেডশিট, যার মোট বাজার মূল্য প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা। একই সঙ্গে চুরি হয়েছে প্রায় ১৯ হাজার বালিশের কভার, ২৭০০টি কম্বল এবং ৩১২টি বালিশ। সম্মিলিতভাবে এই চুরি যাওয়া জিনিসগুলির বাজার মূল্য প্রায় ২২ লাখ টাকা।
এ তো গেল শুধুমাত্র একটি জোনের হিসাব। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, যাত্রীদের একাংশের হাত টান স্বভাবের জন্য কতটা ক্ষতির মুখে পড়ছে ভারতীয় রেল। তাই এই চুরি রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় রেল। নিজেদের বিবৃতিতে রেল জানিয়েছে, এভাবে জিনিস চুরি করা আইনত অন্যায়। একই সঙ্গে ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে, কেউ চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লে ১৯৬৬-র রেলওয়ে আইনের আওতায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে যাত্রীকে জরিমানা তো দিতেই হবে, উপরন্তু জেলের শাস্তি ও বরাদ্দ হতে পারে। এই আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল হতে পারে অভিযুক্তের।