ভারত জুড়ে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা মূল্যবৃদ্ধির এই আবহে অধিকাংশ ভারতীয় নাগরিকই নিজস্ব ব্যবসা তৈরি করতে আগ্রহী। তবে বেশিরভাগ মানুষই জানেন না ঠিক কিসের ব্যবসা করলে তারা যথেষ্ট লাভ করতে পারবেন। যেকোনো ব্যবসা শুরু করবার পূর্বে সেই ব্যবসা সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা আবশ্যক নইলে ব্যবসায় লাভের বদলে লোকসান হওয়া অবশ্যম্ভাবী। আর তাতেই আজকে আমরা এমন এক ব্যবসা সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি যেক্ষেত্রে কোনোরকম শারীরিক পরিশ্রম ছাড়াই আপনি বিনিয়োগের মাধ্যমে যথেষ্ট টাকা উপার্জন করে নিতে পারবেন।
আজ্ঞে হ্যাঁ, আজকে আমরা ভারতে পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা (Petrol Pump Business) সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি। এই ব্যবসার ক্ষেত্রে একদিকে যেমন যথেষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন, অন্যদিকে ঠিক তেমনভাবেই রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স এবং ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কিত যথেষ্ট জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আর এর মাধ্যমেই আপনি আপনার পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা পরিচালনা করে প্রত্যেক মাসে প্রচুর পরিমাণ টাকা উপার্জন করে নিতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ- পকেটে থাকা নোটটি আসল না নকল চিনবেন কিভাবে? রইলো নকল নোট চেনার কিছু সহজ উপায়।
চলুন তবে পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে আবশ্যক বিষয়গুলি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জেনে নেওয়া যাক:-
প্রথমেই জানিয়ে রাখি যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে যথেষ্ট বয়স্ক ব্যক্তিও এই পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা (Petrol Pump Business) শুরু করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ২১ বছর বয়সী ব্যক্তি থেকে শুরু করে ৫৫ বছর বয়সী ব্যক্তিরা পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। এর পাশাপাশি ব্যবসার ক্ষেত্রে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে ভারত সরকারের তরফে স্বীকৃত যেকোনো বিদ্যালয়ের অধীনে নূন্যতম মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এছাড়াও এই ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী ব্যক্তির ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অথবা যেকোনো খুচরো আউটলেটে কিংবা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কাজ করার নূন্যতম ৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা আবশ্যক।
এই সমস্ত যোগ্যতা থাকলেই একজন ব্যক্তি পেট্রোল পাম্পের ডিলারশিপ -এর জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে প্রধান প্রশ্ন হলো ঠিক কিভাবে আবেদন জানানো সম্ভব? আর এই প্রশ্নের উত্তরে জানিয়ে রাখি যে, তেল বিপপণ সংস্থাগুলি মাঝেমধ্যেই তাদের পেট্রোল পাম্পের ডিলারশিপ -এর জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। এই সমস্ত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনি এই তেল বিপপণ সংস্থাগুলির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেট্রোল পাম্পের ডিলারশিপ -এর জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। ডিলারশিপ পেয়ে গেলেই আপনি নিজস্ব পেট্রোল পাম্প খুলতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ- প্যান কার্ড আধার কার্ড লিংক -এর নিয়মে আনা হলো বড়ো পরিবর্তন। বিপদে পড়বার আগে জেনে নিন।
তবে শুধুমাত্র এই যোগ্যতার ভিত্তিতে একজন ব্যক্তি পেট্রোল পাম্প খুলতে পারবেন না। এই সমস্ত যোগ্যতার পাশাপাশি যে বিষয়গুলি অবশ্য প্রয়োজনীয় তা হলো:-
পেট্রোল পাম্প খোলার ক্ষেত্রে সবথেকে প্রয়োজনীয় বিষয়টি হলো বিনিয়োগ। যে ব্যক্তি পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা করতে চান তাকে নূন্যতম ২৫ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ করতে হবে। এছাড়াও যারা পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা করতে ইচ্ছুক তাদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, এই ব্যবসা করতে গেলে আপনার পারিবারিক সম্পত্তির মূল্য ৫০ লক্ষ টাকা কিংবা তার তুলনায় বেশি হতে হবে। এছাড়াও যেসকল ব্যক্তিদের অপরাধ প্রবণতার কোনো রেকর্ড নেই তারাই কেবলমাত্র এই ব্যবসার জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। এর পাশাপাশি যাদের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ঋণখেলাপির রেকর্ড রয়েছে তারা পেট্রোল পাম্পের ডিলারশিপের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন না।
আরও পড়ুনঃ- এই গরমে ১৩ দিনের ছুটি পেতে চলেছেন সরকারি কর্মী সহ স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। কবে কবে ছুটি জেনে নিন
পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে জমির জন্য ২০ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে জমি কেনার ক্ষেত্রে জমি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেবেন। আপনার কেনা জমি নিয়ে কোনোরকম আইনি বিরোধ থাকলে পেট্রোল পাম্প -এর ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। অন্যদিকে, পেট্রোল পাম্পের কাঠামো তৈরি করার জন্য ৩০ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার জন্য ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। অন্যদিকে, লাইসেন্সের তৈরি করার জন্য ২ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রয়োজন হবে। তবে এক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ প্রয়োজন হলেও প্রত্যেক মাসের শেষে আপনি প্রচুর টাকা মুনাফা করতে পারবেন।