ভারতজুড়ে জাল নোটের কারবার নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যগুলির রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ভারতীয় জনগণের চিন্তা বাড়ছে। আর এমতাবস্থায় আপনার হাতে থাকা ১০০, ৫০০ কিংবা ২,০০০ টাকার নোটটি জাল হওয়াও এমন কিছু আশ্চর্যজনক ব্যাপার নয় (Recognize Fake Notes)। জাল নোটের করবার বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ২০১৬ সালে নোটবন্দি করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও আপনার হাতে জাল নোট আসা এমন কিছু ব্যাপার নয়।
তবে আপনার কাছে যে নোটটি রয়েছে তা জাল নাকি আসল তা অত্যন্ত সহজ কয়েকটি পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি বুঝে নিতে পারবেন (Recognize Fake Notes)। যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ জনগণ জানেন না ঠিক কিভাবে নোট পরীক্ষা করে বলে দেওয়া সম্ভব সেটি জাল নাকি আসল নোট, যার কারণে তাদের বারংবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়। আর তাই আজ আমরা এই সমস্যার সমাধান নিয়ে হাজির হয়েছি।
আরও পড়ুনঃ- প্যান কার্ড আধার কার্ড লিংক -এর নিয়মে আনা হলো বড়ো পরিবর্তন। বিপদে পড়বার আগে জেনে নিন।
চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কোন পদ্ধতিতে আপনারা বুঝে নিতে পারবেন আপনার হাতে থাকা ১০০, ৫০০ বা ২,০০০ টাকার নোট আসল নাকি নকল:-
নাগরিকদের উদ্দেশ্যে জানি রাখি যে, আপনার হাতে থাকা নোটটির রঙ দেখেই আপনি বুঝে নিতে পারবেন সেটি জাল নাকি আসল। জাল নোটের রং ঝাপসা হতে পারে, এমনকী এই নোটের রং ফ্যাকাসেও হতে পারে। জাল নোটের লাইনগুলি সাধারণত ঝাপসা হয়। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জারি করা নোটগুলির মুদ্রণের গুণগত মান অত্যন্ত ভালো। সুতরাং, মুদ্রণের প্রকৃতি এবং রং দেখেই আপনি বুঝে নিতে পারবেন আপনার কাছে যে নোটটি রয়েছে সেটি জাল কিনা।
অন্যদিকে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জারি করা নোটের মাঝ বরাবর একটি সিকিউরিটি থ্রেড থাকে, যেটিতে ওই নোটের মূল্য এবং RBI শব্দটি লেখা থাকে। নোটটিকে আলোতে ধরলেই এই সিকিউরিটি থ্রেড চকচক করে এবং তাতে লেখা RBI ও নোটের মূল্যের পরিমাণ দেখা যায়। এছাড়াও সমস্ত আসল নোটের বাঁদিকে মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতি দিয়ে একটি জলছাপ বা ওয়াটার মার্ক দেওয়া থাকে। এই জলছাপ বা ওয়াটার মার্ক দেখেও যেকোনো নোট আসল কি নকল তা অত্যন্ত সহজেই বোঝা যায়।
আরও পড়ুনঃ- এই গরমে ১৩ দিনের ছুটি পেতে চলেছেন সরকারি কর্মী সহ স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। কবে কবে ছুটি জেনে নিন
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে মুদ্রিত নোটে স্পষ্ট ভাবে মাইক্রো লেটারিং করা থাকে যদিও সেগুলি যথেষ্ট ছোট হওয়ার কারণে খালি চোখে ধরা পড়ে না, তবে আতস কাঁচ দিয়ে ভালোভাবে দেখলে স্পষ্টত এগুলিকে দেখা সম্ভব। অন্যদিকে, জাল নোটে এই মাইক্রো লেটারিংগুলি ছড়ানো কালিতে লেখা থাকে অথবা ঝাপসাভাবে লেখা থাকে।
তবে এখানেই শেষ নয়, এছাড়াও ভারতীয় নোটে থাকা সি-থ্রু রেজিস্টার দেখেও আপনি বুঝতে পারবেন আপনার হাতে থাকা নোটটি আসল নাকি নকল। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জারি করা সমস্ত নোটে সি-থ্রু রেজিস্টার থাকে। নোটের সামনে ও পেছনে ছোট ছোট অক্ষরে নোটের মূল্যের ছবি মুদ্রিত থাকে, একই সি-থ্রু রেজিস্টার বলা হয়। আসল নোটকে আলোয় ধরলে এগুলো স্পষ্ট ভাবে দেখা যায়, যা নকল নোটের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ- এই প্রকল্পে আবেদন করলে পাওয়া যাবে ৫ হাজার টাকা। কিভাবে আবেদন করবেন জেনে নিন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে কার্যকরী নোটগুলি অত্যন্ত উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন কাগজে মুদ্রণ করা হয়ে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন অংকের নোটের আলাদা আলাদা টেক্সচার হয় তবে জাল নোটের কাগজ এবং টেক্সচার এতোটা উন্নত মানের হয় না। জাল নোট স্পর্শ করলে সেটিকে পিচ্ছিল মনে হয়। আপনি জাল নোট স্পর্শ করলেই বুঝতে পারবেন সেটি জাল। এছাড়া নোটে থাকা সিরিয়াল নম্বর দেখে আপনি অত্যন্ত সহজেই বুঝে নিতে পারবেন সেটি নকল নাকি আসল নোট। জনগণের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, কেন্দ্র সরকারের তরফে জারি করা নোটগুলোতে সামনে পিছনে এবং পাশের প্যানেলে একই সিরিয়াল নম্বর মুদ্রণ করা থাকে।
উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর মাধ্যমে আপনারা অত্যন্ত সহজে জেনে নিতে পারবেন আপনার কাছে থাকা নোটটি আসল নাকি নকল। এছাড়াও আপনার যদি কোনো নোট নিয়ে সন্দেহ থাকে তবে আপনি ব্যাংক কিংবা কারেন্সি এক্সচেঞ্জ অফিসের মাধ্যমেও জেনে নিতে পারবেন সেটা আসল না কি নকল। নিয়ম অনুসারে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জারি করা নোটগুলি নকল করা অন্যায়। এই কাজের সাথে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের জরিমানা সহ কারাদন্ড হয়ে থাকে। যদিও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে জাল নোটের করবার বন্ধ করার জন্য নানাধরনের প্রচারমূলক কর্মসূচি কার্যকর করা হয়েছে। তবুও যেকোনো লেনদেনের ক্ষেত্রে নগদে টাকা নিলে অবশ্যই সতর্কভাবে টাকা গ্রহণ করুন।