পঞ্চায়েত ভোটের আবহে সুপ্রিম কোর্টের রায় স্বস্তি দিচ্ছে চাকরি খোঁওয়াতে বসা ৩২ হাজার শিক্ষককে। গত ৭ জুলাই কলকাতা হাইকোর্টের চাকরি বাতিল করার রায় খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে বাতিল করা হয় নতুন নিয়োগের প্রক্রিয়াও। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে ডিভিশন বেঞ্চকে এই মামলা নতুন করে শুনে দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট এদিন সাফ জানিয়ে দিয়েছে এমন বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয়। উপরন্তু রায় ঘোষনাকারী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তো ৩২০০০ শিক্ষকের বয়ানও শোনেননি। বলাই যায়, একপ্রকার প্রাথমিক শিক্ষকদের কথা না শুনেই নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতলে দিয়েছিলেন সেটিও খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। যথারীতি সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন শিক্ষকরা, পাশাপাশি নিশ্চিন্ত হয়েছে পর্ষদও।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছিল আগামী চার মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে পর্ষদকে। ততদিন পর্যন্ত পূর্ণ বেতন নয় বরং পার্শ্ব শিক্ষকের স্কেল অনুযায়ী বেতন পাবেন এই শিক্ষকরা। একইসঙ্গে পর্ষদ জানায় এই শিক্ষকদের আবার নতুন করে পরীক্ষা নিতে হবে। যদি তারা সেই পরীক্ষায় পাশ করতে পারেন তাহলে চাকরি বহাল থাকবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন প্রাথমিক শিক্ষকরা। ডিভিশন বেঞ্চ থেকে জানানো হয় বেতন অপরিবর্তিত থাকবে কিন্তু চার মাস পরে পরীক্ষায় বসতেই হবে। পাশ করলে চাকরি থাকবে, নচেৎ নয়। সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দারস্ত হন ৩২ হাজার শিক্ষক।
আরও পড়ুন:- জেনারেল যাত্রীদের জন্য খুশির খবর। এবার রেলের তরফ থেকে পাওয়া যাবে খাবার ও জল।
এদিন সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষকদের পক্ষেই রায় দিয়েছেন এবং কলকাতা হাইকোর্টের খারিজ করে দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে সেপ্টেম্বরে ফের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে না। সুপ্রিম কোর্টে শিক্ষকদের পক্ষে সওয়াল করে আইনজীবীরা জানান, যাদের প্রশিক্ষণ ছিল না তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণে লেগেছে দু’বছর। তারপরে তারা পাঁচ বছর চাকরি করে ফেলেছেন। সুতরাং তাদের কোন ভাবেই অযোগ্য কিংবা অপ্রশিক্ষিত বলা যায় না। সুতরাং কলকাতা হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই ঠিক নয়। উপরন্তু প্রায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার পরীক্ষার্থীর নতুন করে পরীক্ষা নিয়ে ইন্টারভিউ করা প্রায় অসম্ভব। এতে পর্ষদের সময় ও অর্থ উভয়ই অপচয় হবে। উভয়পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে মামলাটি পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে।