new-update-about-new-education-policy
Advertisement

গত মাসেই শিক্ষা দপ্তরের তরফের বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে এই শিক্ষাবর্ষ থেকে রাজ্যে অনার্স গ্র্যাজুয়েশন কোর্সের মেয়াদ ৪ বছর করা হচ্ছে। চার বছরের কোর্সে তৃতীয় বছরের শেষে যাদের ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকবে তারা গবেষণা করতে পারবে। যাদের থাকবে না তারা কেবলমাত্র গ্রাজুয়েট বলে বিবেচিত হবে। বর্তমানে অনার্স বলে আর কিছু থাকবে না তার পরিবর্তে আসবে মেজর। এক্ষেত্রে পাসের সাবজেক্টগুলিকে বলা হবে মাইনর ওয়ান এবং মাইনর টু।

Advertisement

তবে মেজর না নিয়ে যারা এমনি পাস কোর্সে পড়বেন তাদের ক্ষেত্রে স্নাতক তিন বছরেরই থাকবে। এদিকে যে পড়ুয়ারা অনার্স অর্থাৎ মেজর কোর্সে ভর্তি হবেন তাদের ৪ বছর পড়তে হবে কলেজে। অবশ্য অনার্সের পর সেই পড়ুয়ারা মাস্টার্স করতে গেলে মাত্র এক বছরেই ডিগ্রি লাভ করবেন। সুতরাং গ্রাজুয়েশনের পর যারা মাস্টার্স করতে চান, তাদের পড়াশোনাও শেষ হবে পাঁচ বছরেই। এই কোর্সের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল চার বছর পর যখন শিক্ষার্থীরা গ্রাজুয়েট হবে, তখন তাদের আর দু’বছর মাস্টার্স পড়তে হবে না। এক বছরের মাস্টার্স পরেই তারা পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রী পেয়ে যাবে।

Advertisement

শিক্ষা মহলের অনেকেই মনে করেছিলেন রাজ্যে শিক্ষা দপ্তরের এহেনও সিদ্ধান্তের চার বছরের মেজর কোর্সে ভর্তি হওয়া পড়ুয়ার সংখ্যাই বেশি হবে। তবে বর্তমানে চিত্রটা সম্পূর্ণ অন্য দেখাচ্ছে। এ মাসের ১ তারিখ থেকে অর্থাৎ ১লা জুলাই থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া। ১ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন কলেজে চলছে ফর্ম ফিলাপ। সোমবার কিংবা মঙ্গলবার থেকেই মূলত সব কলেজে বেরোনো শুরু হবে প্রভিশনাল মেরিট লিস্ট। কিন্তু এই তালিকা বেরোনোর আগেই চিন্তার ভাঁজ শিক্ষাবিদদের কপালে।

আরও পড়ুন:- শুরু হলো স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের আবেদন প্রক্রিয়া। সবার আগে আবেদন করতে ক্লিক করুন।

কেন? কারণটা হলো এবছর দেখা গেছে অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীই চার বছরের মেজর কোর্সের থেকে তিন বছরের জেনারেল কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। অর্থাৎ গবেষণামূলক পড়াশোনায় কেউ আর বিশেষ আগ্রহী নন। শিক্ষাবিদদের একাংশের মতে এই সম্পূর্ণ বিষয়টা অত্যন্ত তাড়াহুড়ো নিয়ে করেছে শিক্ষা দপ্তর। ফলে পড়ুয়া এবং পড়ুয়াদের অভিভাবকদের এক বিরাট অংশ ধোঁয়াশাতেই রয়ে গিয়েছেন। অধিকাংশ মানুষ বুঝতেই পারেননি এই কোর্সের মাধ্যমে কিভাবে পড়াশোনা হবে। আবার একাংশের মতে পড়ুয়াদের অধিকাংশই কর্মক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুক্ত হতে চাইছেন। সেহেতু তারা চার বছরের মেজর কোর্সের তুলনায় তিন বছরের পাস কোর্সের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথমেটিক্স, ইকোনমিক্স থেকে শুরু করে ইতিহাস, ভূগোল, ইংলিশ, বাংলা- সবেতেই চিত্রটা প্রায় এরকম। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে উলুবেরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, তাদের কলেজে ৭৫ শতাংশ আবেদন পড়েছে তিন বছরের জেনারেল কোর্সের জন্য। কলেজে এত সিট নেই। তাই তারা ওরিয়েন্টেশন কোর্সের ব্যাপারে সকল পড়ুয়াকে অবগত করার চেষ্টা করছেন যতটা সম্ভব। কিন্তু সব মিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছে শিক্ষা দপ্তর যেই চিন্তা ভাবনা নিয়ে এই চার বছরের কোর্স চালু করেছিল, তা কিছুটা হলেও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে।