pm-mudra-yojana-2023-online-apply
Advertisement

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী যুবক-যুবতীদের নিজস্ব ব্যবসা তৈরি করার ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য রাজ্য সরকার তথা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প কার্যকরী করা হয়েছে। আর এই সমস্ত প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি প্রকল্প হলো প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা (PM Mudra Yojana)। এই যোজনার আওতায় যেসমস্ত যুবক-যুবতীরা নিজস্ব ব্যবসা তৈরি করতে চান তারা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেয়ে যান অর্থাৎ ব্যবসার মূলধনের কিছু অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেওয়া হয়ে থাকে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যুবক-যুবতীরা এই প্রকল্প সম্পর্কে সঠিকভাবে না জানার কারণে প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা নিয়ে নানাবিধ প্রশ্ন উঠেছে। আর তাই আজকের এই পোস্টে আমরা এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।

Advertisement

চলুন তবে প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক প্রধানমন্ত্রীর মুদ্রা যোজনা অধীনে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?
মুদ্রা যোজনার অধীনে যুবক-যুবতীদের নতুন ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে সাধারণত তিন ধরনের ঋণ পেয়ে থাকেন। আর এই তিন প্রকার ঋণ হলো শিশু ঋণ, কিশোর ঋণ এবং তরুণ ঋণ। যেসমস্ত যুবক-যুবতীরা নতুন ব্যবসা শুরু করেছেন তারা শিশু ঋণের আওতায় সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে ঋণ গ্রহিতাকে প্রতিবছরের ১০ শতাংশ থেকে শুরু করে ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হয় এবং ঋণ শোধ করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ বছরের সময়সীমা পাওয়া যায়।

Advertisement

কিশোর ঋণের আওতায় ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যেতে পারে। তবে যেসমস্ত যুবক-যুবতীরা নতুন ব্যবসা শুরু করেছেন তারা এই ঋণের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন না, যাদের ব্যবসা ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত তবে এখনও পর্যন্ত সেভাবে সুনাম অর্জন করতে পারেনি তারাই কেবলমাত্র কিশোর ঋণের অধীনে ঋণের জন্য আবেদন জানাতে পারবে। এর পাশাপাশি ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং ক্রেডিট রেকর্ড যাচাই করা হবে। তবে এক্ষেত্রে কতো হারে সুদ প্রদান করতে হবে তা নির্ভর করছে আপনি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিচ্ছেন তার উপরে, এমনকী এক্ষেত্রে ঋণ মেটানোর সময়সীমাও ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্থির করা হয়ে থাকে।

প্রকাশিত হলো ওয়েসিস স্কলারশিপে আবেদনের লাস্ট ডেট। এখনো আবেদন না করে থাকলে এখনই করে নিন

প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার অধীনে থাকা তরুণ ঋণের আওতায় যেকোনো ব্যবসায়ী ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেয়ে যেতে পারবেন। যেসমস্ত ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ইতিমধ্যেই ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং যারা তাদের ব্যবসা দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ করতে চাইছেন তাদেরই কেবলমাত্র তরুণ ঋণের আওতায় সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হবে। এক্ষেত্রেও কিশোর ঋণের মতোই সুদের হার এবং ঋণ মেটানোর সময়সীমা ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক স্থির করা হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার (PM Mudra Yojana) অধীনে ঋণ শোধ করার সময়সীমা ৩ বছর থেকে শুরু করে ৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। এমনকী এক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার জন্য কোনো প্রসেসিং ফি প্রয়োজন হয় না। আর এই যোজনার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়টি হলো পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক ব্যাংক থেকে শুরু করে বেসরকারি সেক্টর ব্যাঙ্ক, রাজ্য পরিচালিত সমবায় ব্যাঙ্ক, আঞ্চলিক খাত থেকে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক, মাইক্রো ফিন্যান্স সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্য আর্থিক সংস্থাগুলি থেকেও মুদ্রা যোজনার অধীনে ঋণ পাওয়া সম্ভব।

এই যোজনার অধীনে ঋণের জন্য আবেদন জানাবেন কিভাবে?
এই যোজনার অধীনে ঋণের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে মুদ্রা যোজনার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://www.mudra.org.in/ -এ যেতে হবে। এরপর মুদ্রা যোজনার ওয়েবসাইটের হোম পেইজের খানিকটা নিচের দিকে থাকা উদয় মিত্র পোর্টালের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট http://www.udyamimitra.in/ -এর লিংকে ক্লিক করতে হবে এবং উক্ত ওয়েবসাইটে গিয়ে Apply Now অপশনে ক্লিক করতে হবে। পরবর্তীতে New entrepreneur/ Existing Entrepreneur/ Self employed professional অপশনগুলির মধ্যে থেকে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে এবং নিজের নাম, ইমেইল অ্যাড্রেস, ফোন নম্বরের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।

এরপর আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পার্সোনাল এবং প্রফেশনাল ডিটেইলস সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। প্রজেক্ট প্রপোজাল তৈরির ক্ষেত্রে যেকোনো সাহায্য প্রয়োজন হলে প্রয়োজন অনুসারে যেকোনো হ্যান্ড হোল্ডিং এজেন্সির সাহায্য নিতে পারবেন নতুবা Loan Application Center এবং Apply Now অপশনে ক্লিক করতে হবে। পরবর্তীতে আপনি শিশু লোন, কিশোর লোন নাকি তরুণ লোন নিতে ইচ্ছুক তা সিলেক্ট করতে হবে এবং নিজের ব্যবসার সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। এরপর প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি আপলোড করতে হবে এবং Submit অপশনে ক্লিক করতে হবে। আবেদনপত্রটি সঠিকভাবে জমা করা হলে আপনাকে একটি অ্যাপ্লিকেশন নম্বর দেওয়া হবে, এটিকে ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য কপি করে রাখুন।

আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি:-
১. আবেদনকারীর ফটো আইডেন্টিটি প্রুফ।
২. স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র।
৩. আবেদনকারীর সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
৪. মেশিন সহ অন্য যেসকল জিনিস কিনতে হবে তার কোটেশন।
৫. সাপ্লাইয়ারের নাম/ মেশিনের ডিটেইলস/ মেশিনের দাম।
৬. আইডেন্টিটি প্রুফ/ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা (লাইসেন্স / রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট সহ অন্যান্য নথিপত্র)।
৭. জাতিগত শংসাপত্র।

এই নথিগুলির পাশাপাশি কিশোর এবং তরুণ ঋণের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট, ইনকাম ট্যাক্স সহ বিগত দুই বছরের ব্যালেন্স শিট (২ লক্ষ টাকার চেয়ে বেশি আমানতের ঋণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য), বর্তমান বছরের সেলস রিপোর্ট, প্রজেক্ট রিপোর্ট, ব্যবসায় পার্টনার থাকলে তার নথিগুলি সঠিকভাবে জমা দিতে হবে।