ভারতের মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ রেশন। পরিবারের জন্য ভারতের এক বৃহৎ অংশের মানুষ এই মাসিক রেশনের দিকে তাকিয়ে থাকেন।বর্তমানে দেশের প্রায় ৮০ কোটি মানুষ প্রত্যেক মাসে বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী পান রেশন দোকান থেকে। আগে কেবলমাত্র সীমিত সংখ্যক কিছু উপভোক্তাদের বিনামূল্যে চাল, গম ইত্যাদি দেওয়া হত। তবে কোভিড পরবর্তী সময়ে দেশের সমস্ত রেশন কার্ড হোল্ডারকেই এই প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার।
তবে বিভিন্ন সময়ে রেশনে পাওয়া চাল-গমের মান এবং পরিমাণ নিয়ে বহু অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। দেশের এমন অনেক মানুষই রয়েছেন যাদের যতটা পাওয়ার কথা তারা ততটা পান না। আবার অনেকেই আছেন যারা খুব নিম্নমানের চাল পান। এই দুর্নীতি মূলত হয় রেশন ডিলারদের মদতে। রেশন দোকানের দুর্নীতি করে কয়েক কোটি টাকা কামিয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা প্রচুর রয়েছে দেশে। এবার সেই দুর্নীতির দিন শেষ।
রেশন দোকানের এই দুর্নীতি উক্তি এবার এক নতুন পদক্ষেপ নিতে চলেছে সরকার। জানা যাচ্ছে এবার থেকে চাল, গমের পরিবর্তে রেশন উপভোক্তাদের সমান টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে। প্রতি মাসে ১৭০ টাকা করে পাঠানো হবে রেশন কার্ড উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। আসলে কার্ড পিছু সকলকে প্রতি মাসে ৫ কিলো করে চাল দেওয়া হয়। যেই চাল দেয় তার দাম ৩৪ টাকা কিলো। যেহেতু পাঁচ কিলো চাল দেওয়া হয় তাই মোট ১৭০ টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। তবে এই ১৭০ টাকা পাবেন শুধুমাত্র বিপিএল ক্যাটাগরির উপভোক্তারা। বাকিরা নিজেদের চাল কিংবা গমের পরিমাণ অনুযায়ী হিসেব করে নিতে পারেন।
এই টাকা পাওয়ায় সুবিধা হবে নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের। তারা চাইলে সেই টাকা দিয়ে চাল কিনতে পারে। কিংবা তার মধ্যে আরেকটু কিছু টাকা যোগ করে একটু ভালো মানের চালও কিনতে পারেন। তবে মাথায় রাখতে হবে, এই সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র চালু হয়েছে কর্নাটকে। দেশের অন্য কোন প্রান্তে এই সিদ্ধান্ত আপাতত চালু করা হয়নি। তবে এই টাকা পাওয়ার জন্য রেশন কার্ড উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করা আবশ্যক। বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের ইস্তেহারে এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কংগ্রেস। এবার সরকার বানিয়ে তারা সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করার চেষ্টা করছে। তবে কর্নাটক সরকারের প্রতি মাসে ১৭০ টাকার পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পাঁচ কেজি চালও বিনামূল্যে পাবেন সেই রাজ্যের বাসিন্দারা।