পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য বিনামূল্যের রেশন সহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প কার্যকর করা হয়ে থাকে। আর এবারে রেশনে চাল, গমের মতো খাদ্যশস্যের পাশাপাশি পাওয়া যাবে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের জিনিস, এমনটাই জানানো হয়েছে খাদ্যদপ্তরের তরফে প্রকাশিত নয়া নির্দেশিকায় (Ration Card Update)।
খাদ্যদপ্তরের তরফে প্রকাশিত এই নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে যে, আগামী দিনে রাজ্যবাসী রেশন দোকানে চাল, গমের মতো খাদ্য দ্রব্যের পাশাপাশি মশলা থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর নানাবিধ উপকরণ পর্যন্ত পাওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে যে, বিভিন্ন জেলায় যেসমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী সহ স্থানীয় এমএসএমইগুলি রয়েছে তাদের সহায়তা করার জন্যই খাদ্যদপ্তরের তরফ এই নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে (Ration Card Update)।
এর পাশাপাশি আরো জানা গিয়েছে যে, রেশন দোকান থেকে চাল, গমের মতো খাদ্যশস্যের পাশাপাশি এই সমস্ত অতিরিক্ত সামগ্রী বিক্রি করার মাধ্যমে রেশন ডিলাররা যেমন অতিরিক্ত উপার্জন করতে পারবেন, ঠিক তেমনভাবেই স্বনির্ভর গোষ্ঠী, সঙ্ঘ, মহাসঙ্ঘ বা স্থানীয় ছোট উদ্যোগপতিরা নিজেদের ছোট ব্যবসায় উৎপাদিত সামগ্রী রেশন দোকানে বিক্রি করার মাধ্যমে উপার্জন করে নিতে পারবেন।
স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপের টাকা এখনো পাননি? কবে পাবেন জেনে নিন।
তবে লাভ যে শুধু রেশন ডিলার কিংবা সংঘ অথবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তা নয়, লাভ রয়েছে ক্রেতাদেরও। পশ্চিমবঙ্গের বহু প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী নাগরিকদের বাড়ি থেকে বাজারের দূরত্ব যথেষ্ট বেশি এক্ষেত্রে রেশন দোকানে সমস্ত সামগ্রী পাওয়া গেলে তাদের এই সমস্ত জিনিসের জন্য আর দূরে যেতে হবে না। সুতরাং, ঝক্কি কমবে ক্রেতাদেরও। তবে রেশন দোকানে এই সমস্ত সামগ্রী রাখার জন্য রেশন ডিলারদের ফুড কন্ট্রোলার অফিসে এই বিষয়েক আবেদনপত্র জমা করতে হবে।
এই আবেদনপত্র খতিয়ে দেখবেন বিশিষ্ট আধিকারিকরা, তারপরই মিলবে অনুমতি। তবে এই সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে কেবলমাত্র রেজিস্টার্ড সংস্থাগুলিকেই সুযোগ দেওয়া হবে। যদিও যেকোনো ধরনের সামগ্রীকে স্থান দেওয়ার ক্ষেত্রেই যথেষ্ট কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে পশ্চিমবঙ্গের ফুড অ্যান্ড সাপ্লাইড ডিপার্টমেন্ট। রেজিস্টার্ড সংস্থাগুলির আওতায় উৎপাদিত দ্রব্যের মান খতিয়ে দেখে তবে এই সমস্ত দ্রব্যকে রেশন দোকানে স্থান দেওয়া হবে, বিভিন্ন ধরনের খাদ্যবস্তুর ক্ষেত্রেই এই নিয়ম বিশেষভাবে কার্যকর করা হবে বলেই জানানো হয়েছে খাদ্যদপ্তরের তরফে।
এবার থেকে আধারের সমস্ত কাজ হবে বাড়িতেই। জেনে নিন আবেদন প্রক্রিয়া
এই সমস্ত উৎপাদিত দ্রব্যের মান নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। আবেদনের ৪৫ দিনের মধ্যে টেস্ট রিপোর্ট জমা পড়বে জেলা অফিসে এবং এই সমস্ত টেস্ট রিপোর্ট খতিয়ে দেখার জন্য বিভিন্ন জেলায় নানাবিধ নির্বাচন কমিটি থাকবে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুসারেই এই সমস্ত দ্রব্যগুলি স্থান পাবে রেশন দোকানে। সমস্ত ধরনের পরীক্ষা সম্পন্ন করার পর এবং নির্বাচন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে উৎপাদিত দ্রব্যগুলির একটি তালিকা তৈরি করা হবে।
পরবর্তীতে সেই তালিকা প্রত্যেকটি রেশন দোকানের ডিলারের কাছে পাঠানো হবে এবং গ্রাহকদের চাহিদা অনুসারে রেশন ডিলার ওই সমস্ত দ্রব্যগুলির মধ্যে থেকে নির্বাচিত দ্রব্যগুলিই রাখতে পারবেন বলেই জানানো হয়েছে খাদ্যদপ্তরের প্রকাশিত নির্দেশিকায়। তবে তালিকাভুক্ত সামগ্রীর বাইরে অন্য কোনো সামগ্রী বিক্রি করতে পারবেন না রেশন ডিলাররা। এমনকী কোনো সামগ্রী জোর করে বিক্রি করতেও পারবেন না রেশন ডিলাররা। সমস্ত দ্রব্য রেশন দোকানে সাজিয়ে রাখতে হবে, তার মধ্যে থেকে ক্রেতারা নিজেদের পছন্দ অনুসারে দ্রব্য কিনে নিতে পারবেন।
এই বিষয়টি ঘিরে যাতে কোনোরকম অনিয়ম দানা না বাঁধে তার জন্য খাদ্য দপ্তরের তরফে জেলা আধিকারিকদের নিয়োগ করা হবে। এই সকল আধিকারিকরা প্রত্যেক ৬ মাস অন্তর অন্তর সমস্ত এই বিষয়টি পর্যালোচনা করে রিভিউ দেবেন। এর পাশাপাশি উৎপাদিত সামগ্রীর চাহিদা কিরূপ রয়েছে তাও খতিয়ে দেখবেন এই সকল অধিকারীরা। তবে এখানেই শেষ নয়, এই সমস্ত দ্রব্যগুলি সম্পর্কে ক্রেতাদের কাছ থেকেও প্রতিক্রিয়া নেওয়া হবে। যদিও আগামী দিনে কবে এই ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে তা সম্পর্কে কোনো তথ্য জানানো হয়নি খাদ্যদপ্তরের তরফে।